মাহবুব-উল-আলম, ভাঙ্গুড়া(পাবনা):
গত বছর চলনবিলসহ পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় অকাল বন্যায় বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় চলতি মৌসুমে বিভিন্ন পেশার মানুষ ক্ষেতের ফসল কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এছাড়া উজানি ঢলের পানিতে স্থানীয় গুমানি নদী ইতোমধ্যে ফুসে ওঠায় নি¤œাঞ্চলের কৃষকরা অনেকটাই উদ্বিগ্ন। তাই এবার কৃষকের পাশাপাশি নি¤œমধ্যবিত্ত ঘরের স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরাও ধান কাটায় শ্রম বিক্রি করছেন।
উপজেলার উধুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের সম্মান ৪র্থ বর্ষের ছাত্র কাওছার শেখ জানায়, লক ডাউনে বাড়িতে বসে সময় কাটছে তাই কয়েক বন্ধু মিলে প্রতি বিঘা জমি চার থেকে সাড়ে হাজার হাজার টাকায় চুক্তি নিয়ে কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছেন তারা। এতে একেক জন দিন প্রায় সাতশ টাকা আয় করছেন।
একই কথা জানালেন ঝি:কলকতি গ্রামের বাসিন্দা ও সরকারি হাজী জামাল উদ্দিন কলেজের ছাত্র মুনজিল হোসেন ও ইয়ামিন হোসেন। এসব কৃষক সন্তানেরা ধান কেটে বড় বোঝা মাথায় নিয়ে কৃষকের ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে মৌসুমের সোনালী ফসল।
ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বকুল হোসেন ও সেলিম নামের দু’জন ছাত্র বলেন,আমাদের শতাধিক বন্ধু এবার ধান কাটায় শ্রম বিক্রি করছে। তারা আরো জানান দরিদ্র ঘরের সন্তান হওয়ায় তাদের এন্ড্রয়েড/স্মার্ট ফোন ছিলনা। সেজন্য করোনা কালিন সময়ে অনলাইনে ক্লাশ করতেও পারেনি। এসময় শ্রমিক সংকটও দেখা দেয় তাই তারা ধান কাটায় শ্রম বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন।
শিক্ষার্থীরা আরো জানান, এ মৌসুমে তারা প্রত্যেকে কমপক্ষে ১২/১৩ হাজার টাকা আয় করবেন। যা দিয়ে তারা এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন কিনবেন যাতে অনলাইনে ক্লাশ করা যায়। এছাড়া এ অর্থ দিয়ে তারা কিছু জামাকাপড় ও বই পুস্তক কিনতে চান। এতে নি¤œ আয়ের বাবা-মায়ের অনেকটা চাপ কমবে বলে তারা মনে করেন।
খানমরিচ ইউনিয়নের কয়রা গ্রামের জোতদার কৃষক আব্দুল হাই ও দিলপাশার ইউনিয়নের মাগুড়া গ্রামের জোতদার কৃষক আলাউদ্দিন জানান, জমির সব ধান পেকে গেছে অথচ শ্রমিকের সংকট। তখন কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরা চুক্তিতে ধান কেটে দেওয়ায় তারা খুবই উপকৃত হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার এনামুল হক শ্রমিক সংকটের কথা ¯^ীকার করে বলেন, এ বছর ভাঙ্গুড়া উপজেলায় ৬ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়। বন্যার আশংকা থাকলেও বিভিন্ন পেশাজীবীসহ শিক্ষার্থীরা মাঠে নামায় কিছু দিনের মধ্যে ধান কাটা শেষ বলে তিনি মন্তব্য করেন।।