সিরাজগঞ্জের দুটি হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া দুই শিশুর মধ্যে একজনকে জীবিত ও আরেকজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। সিসি টিভির ফুটেজ সনাক্ত করে উল্লাপাড়ার সলঙ্গা থানা পুলিশ আলোকদিয়া গ্রামের মৃত সোলায়মান হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুই শিশুকে উদ্ধার করে। একই সময় ঘটনার সাথে জড়িত চোর চক্রের ৫জন নারী এবং ২জন পুর“ষ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলো- উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা থানাধীন আলোকদিয়া গ্রামের মৃত সোলায়মান হোসেনের স্ত্রী সয়রন বিবি, তার মেয়ে আলপনা খাতুন, ছেলে রবিউল ইসলাম, রবিউলের স্ত্রী ময়না খাতুন, একই গ্রামের মৃত সাইফুল ইসলামের স্ত্রী মিনা খাতুন ও রেজাউলের স্ত্রী খাদিজা খাতুন এবং গ্রাম ডাক্তার শরিফুল ইসলাম । এর আগে গত মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল থেকে ২৩দিন বয়সী এক শিশু ও শনিবার বিকেলে উলাপাড়া উপজেলার হাটিকুমর“ল গোল চত্ত¡রের সাকোয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে জন্মের ৬ঘন্টা পর আরেক শিশু চুরি হয়েছিল।
সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জিলানী জানান, শনিবার সকালে তাঁড়াশের নওগাঁ গ্রামের মাজেমের স্ত্রী সমিতা খাতুন সিজারের মাধ্যমে ছেলে শিশুর জন্ম দেন। দুপুরের পর বোরকা পরিহিত এক নারী নার্স পরিচয় দিয়ে সমিতা ও তার স্বজনদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। বিকেল ৩টার দিকে নার্স পরিচয়ধারী ওই নারী বাচ্চার নানীর কাছ থেকে বাচ্চাকে কান্না থামানোর কথা বলে কোলে নেয়। এরপর হাঁটতে হাঁটতে হাসপাতালের বারান্দায় আসে এবং নানীকে ভিতরে চলে যেতে বলে। শিশুটির নানী কেবিনের ভিতরের চলে যাওয়া মাত্র নার্স পরিচয়ধারী নারী বাচ্চাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর পুলিশ এসে হাসপাতাল থেকে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে। সেখানে দেখা যায় এক নারী বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাচ্ছে।
পুলিশ ফুটেজে দেখা নারীকে শনাক্ত করে রাত ১০টার দিকে উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা থানার আলোকদিয়া গ্রামে সোলায়মানের বাড়িতে অভিযান চালায়। এসময় তাদের কাছ থেকে শিশুটি উদ্ধার এবং ৭ জনকে আটক করা হয়। এরপর ঘটনাস্থলেই তাদেরকে গত মঙ্গলবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল থেকে উলাপাড়ার উপজেলার দুর্গানগর ইউনিয়নের ভাদালিয়াকান্দি গ্রামের চয়ন ইসলাম ও মঞ্জুয়ারা বেগমের ২৩ দিন বয়সী শিশু বাচ্চা অপহরণের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে চোরচক্রের সদস্যরা সেই শিশুটিও চুরির বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে ওই বাড়ির একটি ঘরের ধানের ঢোলের ভিতর থেকে মৃত অবস্থায় ওই শিশুটিকেও উদ্ধার করা হয়। তবে কেন? কি কারনে তারা চুরি করেছে সে বিষয়ে এখনো মুখ খোলেনি। তিনি আরো জানান, সংবাদ পেয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আটকৃকতদের থানায় জিজ্ঞাসাবদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় রোববার সলঙ্গা থানায় মামলা হয়েছে।
ছবি সংযুক্ত