শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ভাঙ্গুড়ায় ৭ দিন ব্যাপি বই মেলা জমে উঠেছে উপজেলায় এমপি মন্ত্রীর সন্তান-স্বজনরা প্রার্থী হলে ব্যবস্থা উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ বন্ধে কঠোর নির্দেশনা : ওবায়দুল কাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় দিন ১৮ এপ্রিল। হোসেন আলী ভারতে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়ান আজ ভাঙ্গুড়ায় দুগ্ধজাত ক্ষুদ্র শিল্পের সফল উদ্যোক্তা কলেজ ছাত্র অপু ঘোষ ভাঙ্গুড়ায় নতুন ইউএনও’র যোগদান- জ্ঞানের নিষ্প্রভ বাতিঘর কি আবার আলোকিত হবে ? বুয়েটকে জঙ্গিবাদের আখড়া বানানো যাবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভাঙ্গুড়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইন গরুর হাট ! মাসে কেনাবেচা ৬ কোটি টাকা ভাঙ্গুড়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইন গরুর হাট ! মাসে কেনাবেচা ৬ কোটি টাকা ভাঙ্গুড়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইন গরুর হাট ! মাসে কেনাবেচা ৬ কোটি টাকা

ঘুষ নিয়ে আসামির সঙ্গে দরদামে ব্যস্ত এসআই, হঠাৎ হাজির কমিশনার

অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
  • ১৪৯ সময় দর্শন

পুলিশ কর্মকর্তা হয়ে ব্যবহার করেন চোরাই প্রাইভেটকার। সর্বক্ষণ চলেন মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ে। বড় বড় মাদক ব্যবসায়ী দিয়ে ব্যবসা করান। তাদের ব্যবহার করে খুচরা ব্যবসায়ীদের ধরে এনে টাকা আদায় করেন। ঠিক যেন বড় মাছ দিয়ে ছোট মাছ ধরা।

এসবই এতদিন ছিল আরএমপির তালাইমারী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মাসুদ রানার রোজনামচা। এসআই মাসুদ রানার বিরুদ্ধে অপরাধের পাহাড় জমলেও এতদিন অধরাই থেকেছেন। গত মঙ্গলবার বিকালে পুলিশ কমিশনার অভিযোগ পেয়ে আকস্মিকভাবে নিজেই হাজির হন ফাঁড়িতে।

ঠিক ওই সময় এসআই মাসুদ রানা এক মাদক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য দরদামে ব্যস্ত ছিলেন। হাতেনাতে ধরে পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক তাৎক্ষণিকভাবে এসআই মাসুদ রানাকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেন। মাসুদ রানা ফাঁড়ির চার্জ হারিয়ে এখন পুলিশ লাইনে।

আরএমপির তালাইমারী পুলিশ ফাঁড়িটি নগরীর অভিজাত এলাকা পদ্মা আবাসিকে অবস্থিত। গত দু’বছর ধরে ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে ছিলেন মাসুদ রানা। এতদিন ফাঁড়িটি ছিল মাদক ব্যবসায়ীদের মহব্বতখানা।

বড় বড় মাদক ব্যবসায়ী নিয়েই কাটত মাসুদ রানার দিনরাত। অভিজাত এলাকা হওয়ায় পদ্মা আবাসিক মাদক কারবারের বড় মোকাম। এলাকায় মাদক বিক্রি ওপেন সিক্রেট। এসআই মাসুদ রানার নিয়োজিত মাদক সম্রাটরাই নিয়ন্ত্রণ করেন কারবার। দিনশেষে নোটের বান্ডিল এসে ঢুকত মাসুদ রানার পকেটে।

অভিযোগে আরও জানা গেছে, মঙ্গলবার সোহেল নামের একজন বড় মাদক ব্যবসায়ীকে হেরোইনসহ জামালপুর এলাকা থেকে আটক করে ফাঁড়িতে নেন মাসুদ রানা। তবে তার বিরুদ্ধে মামলা না দিয়ে ফাঁড়িতে রেখে ছেড়ে দেওয়ার জন্য দর কষাকষি করছিলেন।

আটক হেরোইন আরেক মাদক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রির দরদামও করছিলেন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আরএমপি কমিশনার নিজেই হাজির হন ফাঁড়িতে। এ সময় তিনি দেখতে পান- আটক মাদক ব্যবসায়ী সোহেল ও তার পরিবারের লোকদের নিয়ে বসে দরদামে ব্যস্ত মাসুদ।

কমিশনার পুরো ঘটনা অবগত হয়ে এসআই মাসুদ রানাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের নির্দেশ দেন। পরে মাদক ব্যবসায়ী সোহেলকে ২৫ গ্রাম হেরোইনসহ মামলা দায়ের করা হয়।

কমিশনারের ফাঁড়ি অভিযানে সঙ্গে থাকা চন্দ্রিমা থানার ওসি সিরাজুম মুনীর বলেন, এসআই মাসুদ রানাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে থাকা অন্যান্য অভিযোগেরও তদন্ত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের অভিযোগে জানা গেছে, এসআই মাসুদ রানা পদ্মা আবাসিক ও আশপাশের এলাকাকে অপরাধের অভয়ারণ্য করে তোলেন। মাসুদ মাসোহারা আদায়ের সুবিধার্থে মাদক ব্যবসায়ীদের নাম-ঠিকানা ফোন নম্বর দিয়ে একটি রেজিস্টার সংরক্ষণ করতেন। এতে মাসোহারার পরিমাণ ও পরিশোধের তারিখও লিখে রাখতেন।

শতাধিক মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মাসে ১০ লাখ টাকা মাসোহারা পেতেন তিনি। কেউ তাকে ফাঁকি দিয়ে মাদক ব্যবসা করলে, খবর পেয়ে ধরে আনতেন ফাঁড়িতে। একবারে বকেয়াসহ পুরো মাসোহারা আদায় করে ছাড়তেন।

গত ৪ এপ্রিল সন্ধ্যার পর ভদ্রা মোড়ে চালভর্তি একটি মিনিট্রাক তল্লাশি করে ৫ প্যাকেট হেরোইন উদ্ধার করেন এসআই মাসুদ। ট্রাকটি গোদাগাড়ীর বিদিরপুর বাজারের মোহা. টেবলুর মিল থেকে চাল নিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। চালের বস্তার ভেতরে বিপুল পরিমাণ হেরোইনও নিয়ে যাচ্ছিল।

এসআই শাহীন ৫ প্যাকেট হেরোইন, ট্রাকসহ চালক, হেলপার ও একজন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে চন্দ্রিমা থানায় দেন। এদিকে ওই রাতেই এসআই শাহীন মাদকের মূল মালিক হিসেবে বিদিরপুর থেকে মো. টেবলু ও শরিফ নামের দুজনকে আটক করে চন্দ্রিমা থানায় আনেন।

তবে দিনশেষে বিপুল পরিমাণ টাকার বিনিময়ে টেবলু ও শরিফকে ছেড়ে দেওয়া হয় থানা থেকে। বাকিদের মাদকের মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। অভিযোগ রয়েছে এ ঘটনার পরই এসআই শাহীন একটি চোরাই প্রাইভেটকার কেনেন। বরখাস্ত হওয়ার আগপর্যন্ত মাসুদ তার প্রাইভেটকারে পুলিশ লেখা স্টিকার লাগিয়ে শহরে ঘুরতেন।

স্থানীয়দের অভিযোগে আরও জানা গেছে, এসআই মাসুদ রানা ও তার অনুগত কনস্টেবল জামিল প্রতিদিন ধরা-ছাড়ার বাণিজ্য করতেন। কনস্টেবল জামিলের কাছেও রয়েছে একাধিক চোরাই মোটরসাইকেল। মাদক ব্যবসায়ী কাম-সোর্সরা এসব মোটরসাইকেলে দাপিয়ে বেড়ায়।

বড় বড় এসব মাদক ব্যবসায়ী দিয়ে মাসুদ ও জামিল খুচরা কারবারিদের ধরে এনে টাকা আদায় করতেন। মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ে ফাঁড়িতে মাসিক আদায় পরিস্থিতি নিয়েও সভা করতেন মাসুদ ও জামিল। এসআই মাসুদ ও কনস্টেবল জামিল তাদের বিরুদ্ধে উঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এদিকে এসআই মাসুদকে বরখাস্ত করা হলেও তার মূল হাতিয়ার কনস্টেবল জামিল থেকে গেছেন ফাঁড়িতে। তবে মাসুদ ও জামিলের চোরাই প্রাইভেটকার ও চোরাই মোটরসাইকেল হেফাজতে রেখে ব্যবহার করাসহ মাদক সম্পৃক্ততার বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।

বোয়ালিয়া জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) সোনিয়া পারভীন পুরো বিষয় তদন্ত করছেন। এসি সোনিয়া জানান, তিনি তদন্তের নির্দেশ পেয়েছেন। তদন্ত শেষে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
২০২০© এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ*
ডিজাইন - রায়তা-হোস্ট সহযোগিতায় : SmartiTHost
smartit-ddnnewsbd