খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় ধর্ষণের শিকার ৭ম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর (১৩) সঙ্গে ধর্ষকের বিয়ে দিয়ে মীমাংসার ঘটনা ঘটেছে। এদিকে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে ‘প্রেমিক পরিচয়’ দেওয়া যুবকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক কিশোরী। সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর।খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনিতে ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে ৭ম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী। ধর্ষক দুই সন্তানের জনক আব্দুল্লাহ মোড়ল (৩৫) সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে দিয়ে এ ঘটনার মীমাংসা করেছেন স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য, আব্দুল্লাহর মামা মো. বাদল মোড়ল।
সূত্র জানায়, ঝামেলা এড়াতে আইনের আশ্রয়ের পরিবর্তে স্কুলছাত্রীর পরিবার ধর্ষক পক্ষের প্রস্তাবে রাজি হয়ে তাদের বিয়ে দিয়ে দিয়েছে। ৭ম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার ঘটনায় বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইনে খবর প্রকাশের পর ধর্ষক আব্দুল্লাহর মামার মধ্যস্থতায় ঘটনার শিকার স্কুলছাত্রীর নামে ৮ কাঠা জমি ও ২ লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ের মীমাংসা হয় বলে জানা গেছে। উপজেলার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের কাশিমনগরে গ্রামের ইউসুফ মোড়লের ছেলে আব্দুল্লাহ।
সূত্র জানায়, বিষয়টি নিয়ে কোনো পক্ষ আইনের আশ্রয় না নেওয়ায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে ধর্ষক আব্দুল্লাহ। প্রভাবশালী পরিবারের ছেলে আব্দুল্লাহ। অন্যদিকে মেয়ে পক্ষ দরিদ্র ও অসহায় হওয়ায় তারা বিষয়টি নিয়ে থানা কিংবা আদালতের আশ্রয় না নিয়ে তাদের বিয়ের সিদ্ধান্তে রাজি হয়েছে। আব্দুল্লাহ দুই সন্তানের জনক। ঘটনার শিকার স্কুলছাত্রীর সমবয়সি তার একটি ছেলে রয়েছে।এ ব্যাপারে আব্দুল্লাহ মোড়ল মোবাইল ফোনে জানান, বিয়ের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে। মধ্যস্থতাকারী সাবেক ইউপি সদস্য বাদল মোড়লের কাছে বিষয়টি জানতে বারবার তার মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) সংবাদদাতা জানান, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে গভীর রাতে ‘প্রেমিক পরিচয়’ দেওয়া যুবকের সঙ্গে দেখা করতে এসে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক কিশোরী। ‘ছদ্মবেশী প্রেমিক’ তার দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ঐ কিশোরীকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় তিন জনকে আটক করেছে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার রাত ৩টার দিকে উপজেলার খোদাদাদপুর বাওপুকুর গ্রামে।
এ ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া তিন ধর্ষক হলো, ঘোড়াঘাট উপজেলার ঘুঘুরা (ভোতরাপাড়া) গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে নাইট গার্ড লাবু মিয়া (২৮), একই গ্রামের আহাম্মদ আলীর ছেলে রাজমিস্ত্রি আশরাফুল ইসলাম (৩৫), অপর একজন পৌর এলাকার বাওপুকুর গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে রাজমিস্ত্রি ওমর ফারুক (২১)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার ঐ কিশোরীর সঙ্গে দেড় বছর আগে রাজু নামের এক যুবকের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। কিন্তু লাবু নামের ঐ যুবক তাদের প্রেমের কথা জানতে পেরে নিজেকে রাজু পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে বলে। লাবুকে ‘রাজু মনে করে’ গত ৩০ জানুয়ারি দেখা করতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয় ঐ তরুণী। এ ঘটনায় কিশোরীর মা থানায় মামলা করেছেন।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিম উদ্দিন জানান, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পৃথক স্থান থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামিদের সোমবার দিনাজপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে রাজু নামের কারো অস্তিত্ব আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।