উল্লাপাড়া(সিরাজগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ উল্লাপাড়ার হাটিকুমরুল গোল চত্ত¡র এলাকার হোটেলগুলোর বর্জ সরাসরি নদীতে ফেলায় স্বরস্বতি নদীর পানি বিষাক্ত ও দুগন্ধ। সাস্থ্য ঝুকিতে নদী পাড়ের মানুষ। ব্যহত হচ্ছে কৃষি,পশু পালন,ক্ষতি গ্রন্থ হচ্ছে গ্রামীন অর্থনীতি।
ঢাকা-বগুড়া,ঢাকা-রাজশাহী,ঢাকা-পাবনা মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট উল্লাপাড়ার হাটিকুমরুল গোলচত্ত¡র এলাকা। এই এলাকায় উচ্চমান ও সাধারণ মানের প্রায় অর্ধশতাধিক হোটেল রয়েছে। এসব হোটেলের মধ্যে ফুড ভিলেজ,আলিফ লাম, এ্যারিস্ট্রক্র্যাট, হানিফ হাইওয়ে হোটেল,রুপালী, হোটেল বলাকা অন্যতম। এ সব হোটেলের বর্জ, মল-মূত্রের পানি ও পলিথিন-প্লাস্টিক আবর্জনা দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর যাবৎ নিয়ম বহিঃভূত ভাবে সরাসরি পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ¯^র¯^তী নদীতে ফেলে হচ্ছে। ফলে নদীর প্রায় ৪ কি.মি. ব্যাপি পানি বিষাক্ত ও দুগন্ধ হয়ে কৃষি ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নদী পাড়ের চরিয়াশিকার, ধোপাকান্দি, দাদনপুর, খাতর বাড়ীয়া, রশিদপুর গ্রামের নদী কেন্দ্রিক মানুষ ¯^াস্থ্য ঝুকিতে পড়েছে।
কৃষকেরা তাদের কৃষি জমিতে সেচ কাজে নদীর পানি ব্যবহার করতে পারছেন না । ধোপাকান্দির খাদেম আলী সরকার আক্ষেপ করে বলেন, সাহেব গঞ্জের ফুলঝোড় নদী থেকে শুরু হয়ে এই ¯^র¯^তী নদী রশিদপুরের মধ্য দিয়ে আবার ফূলঝোড়ে গিয়ে মিলিত হয়েছে। এই নদীর দুপারের অবস্থিত গ্রাম গুলোর অর্থনীতি ও জীবন-জীবিকা ছিল এই নদীকে ঘিরে। জেলেরা এই নদী থেকে মাছ ধরে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতো। নদীর সেচে চলতো দুপারের ফসলী জমির চাষাবাদ। শুস্ক মওশুমে নদীর ভিতর তৈরী হতো ফসলের বীজতলা, নদী পাড়ের জমিতে হতো বেগুন,কপি,কচু, মুলা,সীমসহ নানা ধরণের শাক সবজীর চাষ। গ্রামের মানুষের ও গবাদী পশুর গোসল, কাপড়-চোপর ধোয়া এমনকি গ্রামের মেয়েরা এক সময় রান্নার কাজে ব্যবহার করতো এই ¯^র¯^তী নদীর পানি ।
দাদনপুরের আজিজ মাষ্টার বলেন- পরিবেশ ও নদী নিয়ে দেশে অনেক কথা শোনা গেলেও এরকম একটি জনবহুল এলাকার হোটেল গুলোর অব্যবস্থাপনার কারনে নদী পারের মানুষের পরিবেশ দূষণের প্রতিকারের চেয়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের নিকট দাবী জানিয়েও কোন কাজ হয়নি। উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়ান মওদুদ আহম্মেদ সম্প্রতি নদীটি সরজমিনে পরিদর্শন করেছেন।
সরকার হিজরা সম্প্রদায়কে সমাজের ¯^াভাবিক ধারায় নিয়ে আসার জন্য ¯^র¯^তী নদীর পাড় ধোপাকান্দি গ্রামে ৫০ জন হিজরার জন্য একটি আবাসন প্রকল্প নির্মান করেছে। প্রকল্পে হিজরাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য রয়েছে গরু-ছাগল ও হাস-মুরগীর খামার। রয়েছে কৃষিকাজের জন্য সবজির খামার। এই উদ্যোগের সফলতার জন্য ¯^র¯^তী নদীর ¯^াভাবিক পরিবেশ অত্যন্ত জরুরী। যদি দ্রুত নদীটির পরিবেশ দূষণমুক্ত না করা হয় , তবে সরকারের হিজরাদের পুর্ণবার্সনের মহৎ উদ্দেশ্য ব্যহত হবে।এই নদীর পানির দুর্গন্ধে আবাসনের বাসিন্দাদের বসবাসই কঠিন হয়ে পরেছে। এ বিষয়ে ফুড ভিলেজ হোটেলের ম্যানেজার সাগর হোসেন বলেন- শুধু ফুড ভিলেজ নয়,এই নদী দুষনের জন্য হাটিকুমরুল গোল চত্ত¡র এলাকার অধিকাংশ হোটেল গুলো দায়ি। কিছু প্রতিষ্ঠান মাটির নিচ দিয়ে পাইপ টেনে নদীতে বর্জ ফেলছে।
এ এলাকার মানুষের জীবন ও জীবিকার সাথে ¯^র¯^তী নদীর সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। নদীর ¯^াভাবিক গতিধারা বহাল রেখে হোটেল গুলোকে নিয়ম ও বিধি মেনে তাদের বর্জ ও আবর্জনা ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে পরিবেশ উপযোগী করতে হবে। এলাকাবাসীর সু¯^াস্থ্য, তাদের কৃষিকাজ,পশুপালনসহ ¯^াভাবিক পরিবেশ সৃষ্টিতে কবে নাগাদ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে, এটাই এখন প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।