সংবাদ ডেস্ক:বনভোজনের আনন্দে মাতোয়ারা হয়েছে ভাসানচরের রোহিঙ্গারা। বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) পিকনিকের আমেজে নেচে গেয়ে অন্য রকম আনন্দের দিন কাটাচ্ছে তারা। খাবারের আয়োজনে ছিলো চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান।
চট্টগ্রামের নামকরা বাবুর্চিদের করা রান্নায় ছিল আতপ চালের ভাত, মহিষের মাংসের ভুনা ও বুটের ডাল। এই ভোজের আয়োজন ছিল চরের প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গাদের জন্যে। ভোজনের শেষে ছিল হাতিয়া থেকে আনা মহিষের দুধের দই।
সকাল হতে না হতেই বনভোজনের স্থান ভাসানচরের ফুটবল মাঠের দিকে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গারা। বড় বড় সাউন্ড বক্স বাজিয়ে নাচেগানে মেতে উঠে রোহিঙ্গা শিশু-কিশোররা। তরুণ যুবকরাও বাদ ছিলো না এ আনন্দে। মাঠের একাংশে বিশাল প্যান্ডেল সাজিয়ে রান্নাবান্না করা হয়। রান্নার জন্য চট্টগ্রাম থেকে নিয়ে আসা হয় রান্নার সমস্ত উপকরণসহ ১৫ সদস্যের বাবুর্চির দল।
দুপুরের মধ্যেই শেষ হয় খেলার আয়োজন। বিস্কুট-মার্বেল এবং চকলেট দৌঁড়ে অংশ নিয়েছে রোহিঙ্গা শিশুরা। ছিলো মোরগ লড়াই ও সুঁই সুতার খেলা। শিশুদের পাশাপাশি অংশ নিয়েছে বড়রাও।
মেয়েদের বালিশ খেলায় জয়ী জেসমিন বলেন, মিয়ানমারে আমরা সেনাবাহিনীর ভয়ে ঘর থেকে বের হতাম না। ভাসানচরে আমাদের কোনো ভয় নাই। আজকের মতো আনন্দ আমি জীবনেও করিনি।
ছেলেদের ২০০ মিটার দৌঁড়ে জয়ী মোহাম্মদ হোসেন বলেন, অনেক খুশি লাগছে। মনে হচ্ছে ঈদের দিন।
খেলাধুলা পর্ব শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এসময় রোহিঙ্গা শিল্পী বশির আহমদ ও নুরুল আমিন গানের মধ্য দিয়ে মিয়ানমারে তাদের করুণ জীবনের কাহিনী তুলে ধরেন।
ভাসানচরের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার ইমতিয়াজ ইত্তেফাককে বলেন, গত মাসে দুই দফায় কক্সবাজারের উখিয়া থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়েছে ভাসানচরে। মূলত তাদের মনোবল চাঙা রাখা এবং বাকি রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে আসতে উদ্বুদ্ধ করতেই বিশেষ এ আয়োজন।