ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি :
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা সাব-রেজিষ্টার শাপলা সুলতানার বিরুদ্ধে ভাস্কর্য ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সমাবেশ বর্জনের অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার সকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলী অডিটোরিয়ামে ওই সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। ‘‘জাতির পিতার সম্মান রাখবো মোরা অম্লান ” এই প্রতিপাদ্যে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এর ডাকে দেশ ব্যাপী কর্মসূচীর অংশ হিসাবে ভাঙ্গুড়া উপজেলা পর্যায়ের সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মসূচীটি পালন করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আশরাফুজ্জান এতে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে ভাস্কর্যবিরোধী অপতৎপরতা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এর বিরুদ্ধে কুরুচিপুর্ন কোনো মন্তব্য বরদাশত করা হবে না মর্মে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শপথ করেন। সেখানে কেবল সাব-রেজিষ্টার অনুপোস্থিত থাকেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা জানান,ওই সাব-রেজিষ্টার সরকারি কর্মকর্তাদের কর্মসূচীর সাথে একমত না হওয়ায় জাতির জনকের সম্মান অক্ষুন্ন রাখার সমাবেশ তিনি এড়িয়ে গেছেন। তিনি স্টেশনে থাকা সত্তেও ইচ্ছাকৃত ভাবে অনুষ্ঠানে যোগ দেননি বলেও তারা অভিযোগ করেন।
এছাড়া সমাবেশে তার অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মকর্তা হিসাবে জাতির পিতার প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শণ ও সংবিধান লংঘনের সামিল বলেও অনেকে মন্তব্য করেন।
এ ব্যাপারে সাব-রেজিষ্টার শাপলা সুলতানার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিসের কর্মসূচী বা কোথায় সেটি হয়েছে আমি কিছুই জানিনা। এছাড়া কর্মসূচীর বিষয়ে ইউএনও অফিস থেকেও আমাকে কিছু জানোনো হয়নি। তাই ওই সমাবেশে উপস্থিত হওয়ার প্রশ্নও আসার কথা নয়।
সমাবেশ সম্পর্কে সাব-রেজিষ্টারের ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন,আমার অফিস থেকে ভাঙ্গুড়া উপজেলায় কর্মরত প্রজাতন্ত্রের প্রতিটি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য ফোন করে মেসেস পৌঁছানো হয় এবং মেসেসটি সবাই পেয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত করা হয়। এরপরও তিনি না জানলে তার দায় তাকেই নিতে হবে। ওই কর্মকর্তা সম্পর্কে তিনি আরো বলেন,সাব-রেজিষ্টার শাপলা সুলতানা কয়েকমাস আগে এখানে যোগদান করলেও উপজেলার সমš^য় সভার একটিতেও তিনি যোগ দেননি।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা অফিসারস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সমাজ সেবা অফিসার মো: জাহিদুল ইসলাম বলেন,কে সাব-রেজিষ্টার ? তার নামই বা কি ! আমি আজো জানিনা। এখানে বেশ কয়েকজন মহিলা অফিসার রয়েছেন কিন্তু ওই অফিসার কারো সাথেই পরিচয় পর্যন্ত করার সুযোগ দেননি। যে কারণে আমরাও তাকে চিনি না।
উল্লেখ্য, সাব-রেজিষ্টার শাপলা সুলতানা ভাঙ্গুড়ায় যোগদানের পর থেকেই দম্ভ নিয়ে চলেন। প্রজাতন্ত্রের নিয়ম-নীতিও তিনি মেনে চলেননা। ভাঙ্গুড়া উপজেলা ব্যতীত অন্য উপজেলায় তার অতিরিক্ত দায়িত্বও পালন করতে হয়না। তারপরও তিনি অফিস করেন (রবিবার,সোমবার) সপ্তাহে দুইদিন। অবশিষ্ট দিনগুলোতে তিনি বাসায় থাকেন। ওই সময় এখানে দলিল রেজিষ্ট্রেশনও বন্ধ থাকে। ফলে দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন উপজেলার ক্রেতা-বিক্রেতারা। এ ব্যাপারে জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ‘দৈনিক সংবাদ’সহ স্থানীয় সংবাদপত্র ও বহু অনলাইন পত্রিকায় খবর প্রকাশ হলেও তিনি বহাল তবিয়তে এখনো সপ্তাহে দুইদিনই অফিস চালাচ্ছেন।
প্রশ্ন হলো-প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মকর্তা সরকারি নিয়মের বাইরে নিজের ইচ্ছেমত সরকারি দপ্তর চালাতে পারেন কিনা ? এছাড়া তিনি অফিসেও অনিয়মিত ভাবে আসা-যাওয়া করেন। ওই কর্মকর্তা কি কারণে সপ্তাহে তিন দিন জমি রেজিস্ট্রেশন বন্ধ রাখছেন উর্ধতন কর্তৃপক্ষের তাও খতিয়ে দেখা দরকার বলে এখানকার অধিবাসীরা মনে করেন।