বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১১:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

চাটমোহরে স্বেচ্ছাশ্রমে সেতু নির্মাণ

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি:
  • আপডেটের সময় : শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২০
  • ২৪৬ সময় দর্শন

পাবনার চাটমোহরে দীর্ঘদিনের জনদুর্ভোগ লাঘবে অবশেষে গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে ৫৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি বাঁশের সেতু তৈরি করা হয়েছে। উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের কাটাখালি কান্দিপাড়া এলাকায় চিকনাই নদীর উপর সেতুটি নির্মাণে কেউ দিয়েছেন বাঁশ, কেউ বা টাকা।

পুরো গ্রামবাসী প্রায় একমাসের স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে নদীর ওপর তৈরি করলেন অস্থায়ী বাঁশের সেতু। সেতুটি তৈরির ফলে ১২টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হলো।

জানা গেছে, পাবনার চাটমোহর উপজেলার এবং নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার সীমান্ত এলাকায় কাটাখালি কান্দিপাড়া গ্রাম অবস্থিত। চিকনাই নদীর ওপারে আরেকটি গ্রামের নাম ‘খৈরাশ’। বর্ষাকাল এলেই খৈরাশ গ্রামটি চাটমোহর উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

ওই গ্রামে প্রবেশের কোনো পাকা সড়ক নাই। কাটাখালি কান্দিপাড়া ও খৈরাশ গ্রামের আশেপাশেই রয়েছে নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল ও চান্দাই ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম। এসব গ্রামের বাসিন্দাদের বেশিরভাগ যোগাযোগ চাটমোহর কেন্দ্রিক। ওই এলাকায় রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। কান্দিপাড়া (কাঠগড়া ব্রিজ) এলাকায় চিকনাই নদীর ওপর কোনো সেতু না থাকায় জনদুর্ভোগের শিকার হয়ে থাকেন লক্ষাধিক মানুষ।

বর্ষাকাল এলেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডিঙি নৌকায় নদী পারাপার হয়ে থাকেন সবাই। কৃষিপ্রধান এলাকায় যানবাহনের অভাবে মাঠ থেকে ফসল আনা-নেয়া বা কেউ অসুস্থ হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিতে পারেন না। অসুস্থ রোগীদের পল্লী চিকিৎসকরাই একমাত্র ভরসা। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী জনপ্রতিনিধিদের কাছে সেখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে এলেও শুধু আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি।

জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে এলাকার মানুষ বাঁশের সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। স্বেচ্ছাশ্রমে এগিয়ে আসেন সরকারি, বে-সরকারি চাকরিজীবী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে গ্রামের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। বাদ যাননি নারীরাও। তারাও সাধ্যমতো সহযোগিতা করেন সেতু নির্মাণ কাজে।

কান্দিপাড়া গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি রমজান আলী বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি কাঠগড়া এলাকায় ব্রিজ নির্মাণ হবে। জীবনের শেষ পর্যায় এসেও ব্রিজ দেখা হলো না। কবে হবে, তাও জানি না।’ এলাকার এমপি, চেয়ারম্যান-মেম্বার থেকে শুরু করে অনেকের কাছেই ধর্ণা দিয়েছি আমরা এলাকাবাসী।

অনেক চেষ্টা করেও একটা সেতু জোটেনি এলাকাবাসীর কপালে, শেষে আমরাই নিজেদের টাকা আর স্বেচ্ছাশ্রমে ৫৫০ ফুট দৈর্ঘ্যর সেতু বানিয়েছি। সেতুটি তৈরির ফলে ১২টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও লাঘব হলো।

স্থানীয় ডিবিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবীর উদ্দিন মোল্লা জানান, কাঠগড়া এলাকায় একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবিতে বহুবার বিভিন্ন দফতরে গিয়েছি। আমিও আশ্বাস ছাড়া কিছুই পাইনি। তবে এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

চাটমোহর উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ রাজু আহম্মেদ জানান, এলাকা পরিদর্শন করে সেখানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃৃপক্ষের কাছে প্রকল্প প্রস্তাবনা দিয়েছি। প্রকল্প অনুমোদন হলে খুব শিগগিরই সেখানে সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরও খবর
২০২০© এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ*
ডিজাইন - রায়তা-হোস্ট সহযোগিতায় : SmartiTHost
smartit-ddnnewsbd