শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
উপজেলায় এমপি মন্ত্রীর সন্তান-স্বজনরা প্রার্থী হলে ব্যবস্থা উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ বন্ধে কঠোর নির্দেশনা : ওবায়দুল কাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় দিন ১৮ এপ্রিল। হোসেন আলী ভারতে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়ান আজ ভাঙ্গুড়ায় দুগ্ধজাত ক্ষুদ্র শিল্পের সফল উদ্যোক্তা কলেজ ছাত্র অপু ঘোষ ভাঙ্গুড়ায় নতুন ইউএনও’র যোগদান- জ্ঞানের নিষ্প্রভ বাতিঘর কি আবার আলোকিত হবে ? বুয়েটকে জঙ্গিবাদের আখড়া বানানো যাবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভাঙ্গুড়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইন গরুর হাট ! মাসে কেনাবেচা ৬ কোটি টাকা ভাঙ্গুড়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইন গরুর হাট ! মাসে কেনাবেচা ৬ কোটি টাকা ভাঙ্গুড়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইন গরুর হাট ! মাসে কেনাবেচা ৬ কোটি টাকা ভাঙ্গুড়া প্রাণি সম্পদ অফিসের নানা জনপ্রিয় কর্মসুচী !

আমি না হয় বোকাই ছিলাম, বোকাই আছি : তসলিমা

অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ২ অক্টোবর, ২০২০
  • ৩৩২ সময় দর্শন

মাঝে মাঝে মনে হয় আমার চেয়ে বেশি বাংলাকে কেউ ভালোবাসে না। বাংলাকে ভালোবেসে আমি ইউরোপ-আমেরিকা ত্যাগ করেছিলাম। এমন নয় যে ইউরোপ-আমেরিকায় আমি নিতান্তই এক নোবডি ছিলাম। তখন আমার বই ছাপাচ্ছে ইউরোপ আমেরিকার বড় বড় প্রকাশনী। তখন আমার দু’কথা শোনার জন্য লোকে টিকিট কেটে সেমিনারে যায়। তখন আমি খবরের কাগজের প্রথম পাতায়। তখন আমি নিরাপত্তা প্রহরী বেষ্টিত। এমন সময় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমাকে যেহেতু বাংলাদেশে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না, আমি পশ্চিম বঙ্গে বাস করবো।

আমার সিদ্ধান্ত হয়তো ভুল ছিল, সিদ্ধান্তে আবেগ ছিল শতকরা নিরানব্বই ভাগ, আর যুক্তি ছিল এক ভাগ- সে আমি জানি। কিন্তু যে করেই হোক, আমি আমার স্বপ্ন পুরণ করেছি। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে একখানা ফেলোশিপ পেয়েছিলাম, সেটি শেষ করেই , ইউরোপ-আমেরিকাকে গুডবাই বলে আমি কলকাতায় বাস করতে শুরু করেছি। তখন, আশ্চর্য, যে বাঙালিরা আমার মাঝে মাঝে এসে কলকাতায় সপ্তাহ দু’সপ্তাহ থাকায় উচ্ছ্বসিত ছিল, তাদের অনেকে আর উচ্ছ্বসিত নয়। আমি তখন আর আকর্ষণীয় কিছু নই। আমি তখন তাদের মতোই গড়িয়াহাটে বাজার করা, তাদের মতোই কলেজ স্ট্রিটে হাঁটা, বা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খাওয়া পাশের বাড়ির কেউ।

আমি তো পাশের বাড়ির কেউই হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে এড়িয়ে চলা তো চাইনি, আমাকে একঘরে করা তো চাইনি। বাংলাকে ভালোবেসে কলকাতায় এসে বাস করাটা অনেকের কাছে বোকামো মনে হয়েছে। ঘরবাড়ি ছিল প্যারিসে, প্যারিস থেকে হার্ভার্ডে গিয়ে ফেলোশিপ করছি, এ শুনে আমার কাছে আসতে যাদের আনন্দ হতো, তাদের অনেকের আনন্দই দেখেছি নিভে গেছে যখন আমি তাদের মতো কেউ হয়ে গেলাম। আমার জনপ্রিয়তা রাতারাতি কমে গেল। তাই বলে বাংলা এবং বাংলা ভাষা থেকে আমার ভালোবাসা কিন্তু উবে যায়নি। আমি আরও আঁকড়ে রইলাম বাংলাকে। বাংলা থেকে নষ্ট রাজনীতি আমাকে চিরবিদেয় দিয়ে দেওয়ার পরও।

লক্ষ করেছি ব্যাক্তি নয়, তার ব্যাক্তিত্ব নয়, তার ভাবনা চিন্তা নয়, সে কোথায় বাস করে, তার ওপর তাকে শ্রদ্ধা করাটা নির্ভর করে। ইউরোপ আমেরিকার কথা বাদ দিচ্ছি। কলকাতার যে বাঙালি ব্যাঙ্গালোরে বা বোম্বেয় বাস করে, তাদের মূল্যটা বেশি । আবার ওদিকে পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে গঞ্জে যারা বাস করে, তাদের কাছে বড় শহরে অর্থাৎ কলকাতায় বাস করা মানুষের মূল্য বেশি। এ শুধু পশ্চিমবঙ্গের কাহিনী নয়, বাংলাদেশেরও একই কাহিনী।

বাংলাদেশের প্রায় সবাই দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার জন্য অস্থির। আমেরিকাকে উঠতে বসতে গালি দিলেও আমেরিকায় বাস করার সুযোগ পেলে বাঙালি হাতে স্বর্গ পায়। বাংলা বাদ দিয়ে কেউ অন্য ভাষায় কথা বলতে পারলে তাকে বিদ্বান এবং বুদ্ধিমান বলে মনে করা হয়। তাই বলি, বাংলাকে খুব কম বাঙালিই ভালোবাসে। আমি না হয় বোকাই ছিলাম, বোকাই আছি। দুঃখ এ কারণে একফোঁটা নেই। ভারতবর্ষে বাস করাটা বিশাল এক চ্যালেঞ্জ। পায়ের তলায় মাটি বলতে কিছু নেই। তারপরও বাংলা যে দেশের অনেক ভাষার একটি, সে দেশকে দেশ বলে মনে হয় বলে বাস করি। এও হয়তো বোকামো। ওই যে বললাম বোকাই ছিলাম, বোকাই আছি, এতে দুঃখ নেই।

-তসলিমা নাসরিনের স্ট্যাটাস থেকে

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
২০২০© এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ*
ডিজাইন - রায়তা-হোস্ট সহযোগিতায় : SmartiTHost
smartit-ddnnewsbd