নিউজ ডেস্ক :করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (আরডিএ) মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. আমিনুল ইসলাম মারা গেছেন।
শনিবার সকাল ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তিনি হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন।
রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত ২২ জন বগুড়ার টিএমএসএস-এ নমুনা দেন আমিনুল ইসলাম। পর দিন নমুনা পরীক্ষায় তার শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এরপর তিনি আরডিএ সেন্টারে নিজের বাংলোতে আইসোলেশনে যান। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ২৯ জুন তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আমিনুল ইসলামের স্ত্রী ও দুই ছেলে রাজশাহীতে বসবাস করেন।
আমিনুল ইসলাম ১৯৮৯ সালের ২০ ডিসেম্বর বিসিএস অষ্টম ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। সুদীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ও সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ছিলন।
২০১৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তিনি বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে (আরডিএ) মহাপরিচালক হিসেবে যোগদান করেন।
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার সাবেক নির্বাহী অফিসার শামছুল আলম এই মৃত্যুর সংবাদটি শুনে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ভাঙ্গুড়া উপজেলায় যোগ দেবার কয়েকদিন পরই আমিনুল স্যার এসেছিলেন ভাঙ্গুড়া; সেই প্রথম পরিচয়। এ উপজেলায় একজন এসিল্যান্ডের খুব প্রয়োজন অনুভব করেছিলাম। তদবির করতে কাউকে বাদ রাখি নাই। স্যার রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার (রাজস্ব) হিসেব দায়িত্ব পেলেন। একদিন রাজশাহীতে অফিসের কাজে গেলাম। স্যার সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে প্রশিক্ষণে ক্লাস নিচ্ছিলেন। আমি বাইরে অপেক্ষা করছিলাম, স্যার কখন বের হবেন সেই অপেক্ষায়। আমাকে অপেক্ষা করতে দেখে হাস্যোজ্বল মুখে বললেন, তুমি কি জন্য অপেক্ষা করছো আমি জানি। এসি ল্যান্ডের সংকট, তবুও চেষ্টা করবো। এ উপজেলায় একযুগ পর একজন এসিল্যান্ডের পদায়ন হয়েছিল।
স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে আমি উপসচিব হিসাবে পদায়িত হবার পর সচিব স্যারের পিএসের কক্ষে বসেছিলাম। হঠাৎ স্যার এলেন। সহাস্য বদনে জিগ্যেস করলেন, কেমন আছো শামছুল? আমার নাম মনে আছে স্যারের! স্যার মরেও অমর হয়ে রইলেন আমার মধ্যে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করলাম ফরিদপুরে। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান স্যার, সকলেই তাকে স্যার বলেই সম্বোধন করেন। কোন মানুষের সাথে কষ্ট দিয়ে কথা বলেছেন এমনটি কোন দিন দেখি নাই। সব সময় হাসি মুখ।
অথচ দু’জন মানুষই ইন্তেকাল করলেন। তাঁরা যেন জান্নাতবাসি হন এ দোয়া সকলের নিকট।